প্রথমবিশ্বের মানুষকে গনআন্দোলন বা অন্য কোন লড়াই সংগ্রামের পথে যুক্ত করার উপায় নেই…

mT1HTfM-7Hv-BlgT5Linxig-1প্রথমবিশ্বের মানুষকে গনআন্দোলন বা অন্য কোন লড়াই সংগ্রামের পথে যুক্ত করার উপায় নেই…
(llbangla.org)
এখন প্রথম বিশ্বে বহু আন্দোলনকারীদের মাঝে এক প্রকার নিঃশ্বিম হতাশা নেমে এসেছে। তারা তাঁদের আদর্শগত সীমাবদ্বতাটা বুঝতে পারছেন। তাঁদের নিকট এখন এটা পরিস্কার যে, প্রথম বিশ্বের জনগন তারা ধনিই হোন বা গরীব, সাদাই হোন বা কালো, শিক্ষিত হোন বা অশিক্ষিত হোন তাতে কিছু যায় আসে না। তারা জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ স্তরে অবস্থান করেন। তারা এখন কোন প্রকার বিপ্লবী আন্দোলনে ঝুঁকি নিতে আসবেন না। তারা ঝাপিয়ে পড়ার মত অবস্থানে নেই।  তারা প্রলেতারিয়েতের স্তরে না থেকে অনেকটা মধ্যবিত্তের স্তরে দিনাতিপাত করছেন। তারা এমন কি কোন প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ও অংশ নিতে নারাজ। এখন তাঁদের সকল আশা ভরষার কেন্দ্র হলো তাঁদের তরুন সমাজ, অভিবাসী ও লুম্পেন শ্রেণী ইত্যাদী। তবে তা ও আবার তত্ত্বীয় পর্যায়ে। প্রায়স যারা লুম্পেনদের নিয়ে স্বপ্নদেখেন বা আশাবাদ ব্যক্ত করেন –সেই মানুষদের সাথে কি তাঁদের যোগাযোগ আছে, তাঁদের জীবন যাত্রার সাথে কি তারা পরিচিত? তবে যাদের সেই লোকদের সাথে উঠাবসা আছে, যারা জ্ঞানগত ভাবে সৎ তারা অবশ্যই বুঝবেন যে লুম্পেন্দের সামাজিক কোন প্রকার ভিত্তি নেই। সুতরাং তারা বিপ্লবের কোন সহায়ক শক্তি ও হতে পারবেন না । তারা বড়জোর কর্মী সংগ্রহে কিছু ভূমিকা রাখতে পারেন, কিন্তু এটা ও সত্য যে, সংগ্রাহকের সামাজিক ভিত্তি না থাকলে তাঁদের দ্বারা ও তেমন কোন উপকার হয় না । প্রথম বিশ্বের প্রলেতারিয়ানদের ধরন ও প্রকৃতি এক বিশেষ রূপ ধারন করেছে। তা এখন আর সেই যুগের মত নেই। তাঁদের দাবী দাওয়ার ধরন ও পাল্টে গেছে –তা এখন আদির্শিক দাবী দাওয়ার পরিবর্তে গতানুগতিক ইস্যু ভিত্তিক রূপ ধারন করেছে। আর এই ধরনের অরাজনৈতিক চর্চার কারনে প্রথম বিশ্বের সংগঠন গুলো ও অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
আন্দোলনকারীদের হতাশার আরো একটি কারণ হলো যে, প্রথম বিশ্বে কোন আন্দোলনই এখন আর বিপ্লবী রূপ ধারন করে এগোতে পারে না। পৃথিবীর এখন সকল আন্দোলন ই ফিকে হয়ে গেছে, তা অনেকটা মাওবাদী সংগঠন গুলোর মতে “গন লাইনের” ধারা। গন লাইন প্রকৃত বিচারে মাওবাদী আন্দোলন নয়।  লেনিন ও তার বিপ্লবী অবস্থানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে – ইউনিয়ন ভিত্তিক সংঠনের সীমাবদ্বতার কথা বলেছেন। নৈরাজ্যবাদী, জাতীয়তাবাদী ও নানা প্রকার গতানুগতিক লোকেরা এতে যুক্ত হয়। গন লাইনের আন্দোলন গুলো সাধারনত সংগঠন, নেতৃত্ব, এবং তাৎক্ষণিক ইস্যূ নিয়ে সাধারণ জনগণের চাহিদা মেটাতে অগ্রসর হয়ে থাকে। একবার একজন স্যান্দারিস্টা কম্যান্ডার এক গনলাইন সম্পর্কে বলেছিলেন যে, “ দল যেখানেই যাবে সেখানেই সমস্যার সমাধান করবে”। সমস্যা সমাধানের জন্য  জনে জনে কাজ কাজ করবে। আবার সকল প্রচেস্টার ই লক্ষ্য থাকবে সমস্যার সমাধান করা। তা যদি যথাযথ ভাবে করা হয়, তবে থাকে বিনয় ও সম্মানের চোখে দেখা হয়, এবং সেই সময়ে একটি নেতৃত্বকে হাজির করা হয়, আর এই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই সাধারণ জনগণের বিশ্বাস অর্জন করা হয়। কাজের উদাহরন সৃষ্টি করে ক্রমে নেতৃত্বের প্রতি আস্থ অর্জন করা হয়। যখন নেতৃত্ব প্রতিস্টিত হয়ে যায় তখন তাকে সকলেই অনুসরন করতে থাকেন। তখন বৃহতর জনগণ তাকে মেনে চলেন। তখন পার্টির পক্ষে ও সকলকে অনুসরন করানো সহজতর হয়। আরো পরিস্কার করে বললে বলতে হয়, যখন কোন নেতা মানুষের আস্থা অর্জন করেন তখন তার কথা সকলে শোনেন, তারা নেতার কোথায় সামাজিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য ও প্রস্তুত হন। কোন বিশেষ একটি ইস্যূ বাস্তবায়ন করলে তাৎক্ষণিক ভাবে সাধারন  জনগনের উপর এর প্রভাব পরতে পারে, তখন তা সামাজিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে সংগঠন কে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে থাকে।
প্রথম বিশ্বে গন লাইন প্রয়োগের ও তেমন কোন আওয়াম জনতা নেই, এমন কি সেখানে বিপ্লবী কোন সামাজিক শক্তি ও নেই। সেখানে এমন কিছু প্রতিক্রিয়াশীল মানুষ আছেন যারা তাৎক্ষণিক লাভের আশায় উতপেতে বসে আছে। তারা মুলত বুর্জোয়া শ্রেনীর ই অন্তর্গত।
প্রতিক্রিয়াশীলদের মাঝে গন লাইন প্রয়োগ করা ফ্যাসিস্টদের  চেয়ে ও বেশী কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, জনপ্রিয় প্রতিক্রিয়াশীল নেতৃত্ব ই তাঁদের জন্য উপযোগী, কমিউনিস্ট নেতৃত্ব তাঁদের জন্য উপযোগী নয়। প্রথম বিশ্বের কতিপয় দেশে প্রক্রিয়াশীল নেতৃত্ব প্রয়োগ করা গেলে ও সেখানে কমিউনিস্ট নেতৃত্ব প্রয়োগ করা যায়নি ।  প্রথম বিশ্বে সামাজিক ভাবে খুবই নিচু স্তরের মানুষ পরিবেশ ইস্যু সহ কতিপয় বিষয়ে আন্দোলন করলে ও বিপ্লবী আন্দোলনে তারা অনাগ্রহী। কোন কোন ক্ষেত্রে কেহ কেহ গন লাইন কে কর্মী সংগ্রহের মাধ্যম মনে করলে ও সে সংগৃহীত লোকেরা সত্যিকার আন্দোলনে সরিক হয় না । এটা কোন মেজিক নয় যে দেশে জনগণ হঠাত করে জেগে উঠবে আর  আর গন লাইন প্রয়োগ করে প্রথম বিশ্বের  বুর্জোয়া ও অন্যান্য মানুষের প্রকৃতি পরিবর্তন করে দিবে। গন লাইন এমন কোন বিশেষ অবিস্কার নয় যা দেশের মানুষের রাতারাতি কোন পরিবর্তন এনে দিবে। এর আগে ও অনেক  ব্যাক্তি ও সংগঠন  এই গন লাইন কে প্রথম বিশ্বে বপ্লবী কর্মধারার আগেই প্রয়োগ করে দেখেছেন। তাঁদের অভিজ্ঞতায় বলে ইহা বিপ্লবী কর্মকান্ডের জন্য মোটেই কার্যকরী নয়। তবে ইহা তৃতীয় বিশ্বের মানুষ প্রথম বিশ্বের প্রতিরোধের পদ্বতি হিসাবে তা অনুসরন করা যেতে পারে।
যারা প্রলেতারিয়েতের জন্য প্রথম বিশ্বের বিপ্লবের পথ হিসাবে গন লাইন কে অনুসরন করতে চায় তাদেরকে বলব দয়া করে কেবল কথা না বলে বাস্তবে কাজ করে দেখুন। কথার মালাগাতা আর ফুলজুরী উড়ানো যতেস্ট নয়। প্রকৃত ভাবে বাস্তবে কাজ করা দরকার । আমরা তা দৃড়তার সাথে বলতে পারি যে, তারা যখন ই বাস্তবে কাজ করে ব্যার্থ হবেন তখন ই প্রথম বিশ্বে বিপ্লব করার আশা ত্যাগ করে তাঁদের প্রচলিত চিন্তা ভাবনার অবসান ঘটাবেন। সত্যিকার ভাবেই যদি তারা বিপ্লবী হন, তবে তারা তাঁদের সংশোধনবাদ সম্পর্কে পুনঃ মূল্যায়ন করবেন। আমরা বিশ্বাস করি তাঁদের জ্ঞানগত সততা স্পষ্ট করে দিবে যে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম সম্পর্কে যা বলেছি তা কত টুকু সঠিক এবং কত টুকু বেঠিক। আসল কথা হলো, প্রথম বিশ্বে উল্লেখ করার মত কোন প্রলেতারিয়েত শ্রেণী নেই। আলোকিত সাম্যবাদ হলো প্রাগ্রসর বিপ্লবী বিজ্ঞান। সকল সমস্যার সমাধান হলো বিশ্ব ব্যাপী গন লড়াইয়ে। আমাদের জীবন হলো আংগোলের মাথায়। একতা, শৃংখলা, বলিদান, সাহস, স্পর্ধা আমাদের বৈশিষ্ট্য। লিডিং লাইট অনুসরন করুন! লিডিং লাইট হোন ! সূর্য্য উঠছে ! আমাদের দিন আসছে!! #শিহাব