চীনের বিলিনয়ির এবং আমেরিকার মিলিনয়িরগন কিছুটা বিভ্রত হয়েছেন

2016_02_24-CultureCityBillionaires-r10-LM-14217555542(llbangla.org)

হুরান প্রতিবেদন অনুসারে, চীনের মানুষের মাঝে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা এই প্রথমবারের মত আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গেলো। এটা গত বছরের আগস্ট মাসের কথা । ৯০ এর পর এই প্রথম আমেরিকাকে অতিক্রম করলো চীন। তারা বলছেন আমেরিকার তুলনায় তাদের বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা এখন বেশী। আমেরিকার আছে ৫৩৮ জন আর চীনের আছে ৫৬৮ জন। যদি এই সংখ্যা সত্যি হয়, তবে চীনে এখন দুনিয়ার যে কোন দেশের চেয়ে বিলিয়নিয়ার বেশী। তবে অন্যান্য প্রকাশনা বিলিয়নিয়ারের হিসাব নানা ভাবে হাজির করে থাকেন। ফরবেসের মতে এখন ও চীনের চেয়ে আমেরিকা বিলিয়নিয়ারের সংখ্যায় অনেক অনেক এগিয়ে আছে । চীনের লোকেরা নিজেদের গর্ব প্রাকাশের মাধ্যম হিসাবে নিজেদের বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা প্রকাশ করেছে। তাদের সরকার নিজেদেরকে এখনো “কমিউনিস্ট” বলে দাবী করছে। তারা নিজেদের দেশে “সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি” লালনের কথা বলছেন। তাদের পতাকা এখনো লাল। যদি সত্যি চীন নিজেদেরকে বিলিয়নিয়ারের চেম্পীয়ন বানিয়ে গর্ব প্রকাশ করতে চায় তবে সেখানে ধরে নিতে হবে যে, সাম্যবাদের মৃত্যু ঘটেছে। আর পতাকা উঠেছে ঘৃন্য পুঁজিবাদের ।

এই যে দেং জিয়াও পিং – যাকে আমরা জানি “ পুঁজিবাদের দ্বিতীয় পথিক হিসাবে”- সংস্কৃতিক বিপ্লবের কাল থেকেই তিনি চীনের বিপ্লবের ধংসের জন্য কাজ করছেন। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালে তিনি প্রচার করতেন, “ধনী হওয়া একটি গৌরবের বিষয় !” একজন সত্যিকারের সাম্যবাদি মানুষ তা সমর্থন করতে পারেন না । আর বিলিয়নিয়ের সংখ্যা বাড়িয়ে গর্ব ও করতে পারেন না, বরং যারা মানুষের সম্পদ নষ্ট বা চুরি করে বিলিয়নিয়ার হবে তাদেরকে ফায়ারিং স্কোয়ার্ডে পাঠাবেন। লিডিং লাইট কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, যতদিন একজন পুঁজিবাদী থাকবে তত দিন সে আমাদেরকে দরিতে  বেঁধে বিক্রি করতে থাকবে। কোন সত্যিকার সাম্যবাদি অর্থনীতি আমেরিকার সাথে অসম আয় আর বৈসম্য নিয়ে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হতে পারে না । মন্দ কাজে কোন প্রতিযোগীতা হতে পারে না । এক টি সাম্যবাদি অর্থনীতি কোন ভাবেই তাঁর জনগণকে – বিশেষ করে দরিদ্র ও ঝুকিপূর্ন মানুষকে জোর করতে পারেন না – আমেরিকার জন্য সস্তায় জামা কাপড় ও অন্যান্য পন্য তৈরী করে দিতে । মাওবাদিরা প্রায়স বলেন যে, “ কখন ও শ্রেনী সংগ্রামকে ভূলে যাবেন না !” কিন্তু সেই তথাকতিত “কমিউনিস্ট” পার্টি এই কথা বলে না । তারা সকল ক্ষেত্রেই বিপরিত কাজে লিপ্ত রয়েছে।

এখন এমন একটা সময়, যখন কত কিছুই না প্রকাশিত হচ্ছে। নিশ্চয় এই বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা প্রাচারের পেছনে ও নানা কাহিনী থাকতে পারে । আমেরিকানদের জন্য এটা কোন সংবাদই নয়। এরা এর জন্য চিন্তিত ও নন। আমাদের দেখার বিষয় হলো যে, চীনে এখন পৃথীবীর প্রায় চার ভাগের এক ভাগ লোক বাস করেন। আমেরিকা থেকে তাদের লোক সংখ্যা অনেক অনেক বেশী। মাত্র এক শতাব্দী আগে ও বিশ্বের প্রতি চার জন মানুষের  মধ্যে একজন ছিলেন চীনের । চীনের জন সংখ্যার মধ্যে এখন ও – ধনী এবং গরীব- তুলনা করলে দাড়ায় ১.৩৫৭ বিলিয়ন চরম দরিদ্র যা আমেরিকার জন সংখ্যা ৩১৬.৫ মিলিয়নের চেয়ে অনেক অনেক বেশী। এমন কি হরুন প্রতিবেদন সঠিক হলে ও চীনের বিলিয়নিয়ারদের  মাথা পিছু আয়ের দিক থেকে আমারিকা বহু অগ্রসর হয়ে আছে। সহজ ভাবে বললে এখনো  বহু বহু গুন বেশী বিলিয়নিয়ার আমেরিকায় বেশী বসবাস করেন। মার্কিন অর্থনীতির সাথে চীনের অর্থনীতির এখন ও প্রতিযোগীতা করার মত যোগ্যতাই অর্জিত হয়নি। বৈশ্যিক আয় বৈষম্যের বিচারে একজন বিপ্লবী বিজ্ঞানীর দৃস্টিতে বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা কোন গুরুত্ব পূর্ন বিষয় নয়। আসল কথা হলো চীন বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় আমেরিকাকে কোন দিনই ধরতে পারবে না ।

চীনারা এই ধরনের ফাজলামি ও গর্ববোধের শিক্ষাটি নিয়েছে মার্কিনিদের নিকট থেকে। মার্কিন লিখক জন স্টেইন বেক আর্থিক মন্দার সময় লিখেছিলেন, “ মার্কিন সমাজে সাম্যবাদ শিকর গাড়তে পারবে না, কারন এখানকার দরিদ্র সমাজ নিজেদেরকে বঞ্চিত মনে করেন না, তবে এই তথ্য মিলিয়নিয়ারদেরকে সাময়িক ভাবে বিভ্রত করতে পারে”। স্টেইন বেক মার্কিন সমাজ সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন করেছেন- দরিদ্রদের সম্পর্কে ও সঠিক কথা বলেছেন- তিনি বিশ্ব সর্বহারাদের বিষয়টি চিন্তা করেননি, তিনি কেবল ধনীদের বিষয়টি বিবেচনা করেছে। আমেরিকার জনগণ যা বুঝতে পেড়েছেন তা প্রথম বিশ্ববাদি, আদর্শবাদী মতান্দ্ব চক্র তা ও বুঝতে পারেন নাইঃ প্রথম বিশ্বে প্রলেতারিয়েত নেই, তারা সাম্রজ্যবাদের নাগরীক হিসাবে তাদের উপরের শ্রেনী থেকে যা অর্জন করে তা তাদেরকে সন্তুস্ট রাখে। আর সেই কারনেই আমেরিকায় সাম্যবাদ ভিত্তি তৈরী করতে পারছে না । স্তালিনের আমলে এই বিষয়টি কেহ কেহ বুঝতে পেড়ে ছিলেন। আর সেই জন্যই ১৯৪০ সালে “দি গ্রাপস অব ওর্থ” ছবিটি নিষিদ্ব করা হয়েছিলো। কেননা এতে দেখানো হয়েছিলো যে, আমেরিকার অতি দরিদ্র মানুষ ও গাড়ী কিনতে পারেন, যা শুধু সোভিয়েত নয় দুনিয়ার বহু দেশের মানুষই তা পারেন না ।  একে এম শিহাব

Sources (তথ্য উৎস)

http://www.cnbc.com/2016/02/24/china-has-more-billionaires-than-us-report.html
http://www.dailykos.com/story/2015/7/5/1398182/-Temporarily-embarrassed-millionaires